Wednesday, December 25, 2013

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, গাজিপুর

২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠেই আমরা বিডি রেঞ্জারস ১টা গাড়ী আর ৫ টা বাইকে করে ঢাকা থেকে বের হব হব এই উত্তেজনায় আমি বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে:D:D:D 

Picture: Joglul Pasha

Picture: Joglul Pasha


কিন্তু কিসের কি যাব? সবাই বের হতে হতে ৯টা বাজালো। যাক শেষ পর্যন্ত ৯.৩০-এ সবাই নাস্তা খেয়ে বাঘের বাজারের দিকে গমন করলাম, বলে রাখা ভালো সকাল সকাল খুব ঠান্ডা পড়ছিল, বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডা গমন হয়ে গেলো। পথে কয়েকবার রেস্ট নেয়া হচ্ছিল। এর মাঝে আমার আবার গরমে অবস্থা খারাপ হয়ে গাড়ি থেকে নেমে বাইকের ভ্রমন শুরু হল। 

আমি যার বাইকে ছিলাম রাকেশ ভাই, উফ উনার কথা আর কি বলব-মনে হয় ধুম-৩ এর আমিরের বাইকে উঠলাম। ২ জনকে পিছনে নিয়ে সেই কি টান উনার সারা রাস্তায়- আমি আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে গেলাম। এরকম লাইভ ডেয়ারিং বাইক রাইডিং খুব কমই হয়েছে আমার। মনে হচ্ছিলো ঘোস্ট রাইডারের বাইকে উঠলাম, এছাড়া সজিব আর সোহাগ আমকে আগেই বলেছে রাকেশ ভাইয়ের হাড্ডিগুড্ডি নাই-লাইফ মানেই তার কাছে বাইক, আর হাত পা কয়বার ভাংসে তার নাকি হিসাব নাই। নাহ এই মেমরি কোনদিন ভুলবো না। উনার আর একটা ফ্রেন্ড আমাদের সাথে জয়েন করে গাজিপুর থেকে। আমরা রওনা দিয়ে যখন গাজিপুর চার রাস্তার জ্যামে, তখন উনার ফ্রেন্ড ঢাকা থেকে বাইক নিয়ে আমাদের সাথে জয়েন করে। ও তো ঘোস্ট রাইডারের বাপ!! যাই হোক সেইফলি বাঘের বাজার দিয়ে সাফারি পার্কে গেলাম আমরা। টিকেট কেটে ভিতরে গিয়ে এদিক সেদিক করে সজিব আমাদের বিডি রেঞ্জারস এর এক্স-ম্যানেজার বলে, আগেই কোর সাফারিতে না গিয়ে চল পাশেরটাতে যাই নইলে পরে সবাই অইডা দেখবে না। আমি কইলাম চল। 

যাবার পর ম্যাকাও পাখি আর আর তার বাচ্চা কাচ্ছা দেখতে তাদের খাঁচায় ঢুকলাম, চিড়িয়াখানা আর সাফারির পার্থক্য মনে হয় সেইখান থেকেই বুঝতে পারছিলাম। চারদিকে খাঁচা কিন্তু অনেক স্পেস যেখানে আমার মাথার উপর ম্যাকাও উড়ে, বাচ্চাগুলো কিচির মিচির। হাহা। ম্যাকাও কতগুলো ছবি তুলার সময় যে পোজ দিচ্ছিলো হাহা মনে হচ্ছে প্রফেশনাল!! 





Photo Credit: Sumit Bikram Rana 

যাই হোক একে একে কুমির পার্ক, লিজার্ড পার্ক, ফেন্সি ডাক গার্ডেন, ক্রাউন্ড ফিজ্যান্ট এভিয়ারি, প্যারট এভিয়ারি, ধনেশ পাখিশালা, ম্যাকাউ ল্যান্ড, মেরিন একোয়ারিয়াম, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি বাগান, ক্লাইমেট হাউজ, ভালচার কর্নার, ঝুলন্ত ব্রিজ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ফোয়ারা দেখে কোর সাফারি দেখার জন্যে লাইনে দাঁড়িয়ে দেখলাম টিকেট বেচা বিক্রি নাই, লাইন অনেক বুঝেই লাইনে দাড়াই গেলাম ১০ জন, বাকিরা সামনে গিয়ে হাব ভাব বুঝতেছিল। এর মাঝে গেইট ধাক্কাধাক্কি চলল-সজল খুব গরম হয়ে কয়েক বার আঙ্গুল দিয়ে শাসাইলো। 

কোর সাফারিতে ঢুকার পর তো মাথা নষ্ট। সাফারি পার্কের নিজস্ব কোষ্টারে করে আমাদের ১৬ জনকে নিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল আফ্রিকা। আসলে পরিবেশ দেখে আমি ১০০% দিবো আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সাফারি পার্ককে, ডিসকভারি নেটজিও-তে আফ্রিকা থাইল্যান্ডের সাফারি দেখে দেখে একটা ধারনা তো আছে। যাই হোক কথা না বাড়াই ছবি দেখে বাকিটা আপনাকে বুঝতে হবে। আমি আর কিছু বলছি না। 





Photo Credit: Sumit Bikram Rana 

আর আমাদের সাথে এবার ফটোতে ছিল অনি আর আমাদের সবার নেপালী বন্ধু সুমিত-সুমিতের কথা কিছু বলে রাখি, সে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটে পড়ছে সজলের সাথে, অরিজিনাল ফ্রম নেপাল। সে এক্স আর্মি ম্যান। ২ বছর পর হাতে বাইক পেয়ে আমাকে নিয়ে গাজিপুর সাফারি থেকে ঢাকা নিয়ে এসেছে- ঘোস্ট রাইডাররা তার রাইডিং মার্ক ১০০/১০০ দিয়েছে। বাট ঢাকায় কিন্তু তার কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। যেভাবে লাস্ট ৩০মিনিট চালিয়েছে মনে থাকবে অনেকদিন। আসার পথে অনেক জ্যাম পেয়েছিলাম, সুমিত খুব ভালো ভাবে চিপাচাপা দিয়ে বাইক বের করে উত্তরা নিয়ে এসেছে। ধন্যবাদ পাওনা থাকলো-তার এনার্জির তারিফ করতে হবে আরেকবার- সবাই যেখানে বাসায় এসে মরার ঘুম সে সারাদিনের আমাদের সব ফটো এডিট করে রাতে ফেইসবুকে আপলোড করেছে। 

আগের আমার সাজেক ব্লগে রিসেন্ট কিছু সাজেকের পিকচার দিয়েছিলাম, সেগুলো তারই তোলা। আর অনিকে আবার ধন্যবাদ ভিডিওটা শেয়ার করার জন্যে। ইউটিউব লিঙ্কটা শেয়ার করে দিবো। দেখে নিবেন লাইভ আমাদের সাফারি ট্যুর।

বিডি রেঞ্জারস-এর সবাইকে আবারো ধন্যবাদ, ফয়সাল জাহিদ রানা বাধন জিতিয়া সবাইকে একসাথে পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। সারাদিন অনেক ভালো কেটেছে। 

বলে রাখা ভালো সেইদিন আমার অফিস ছিল, কিন্তু আমি সিক লিভ কাটাইছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিক হইতেই হয় নইলে লাইফে মজা থাকে না। 

এবার আসেন কিছু জানি আমাদের সাফারি পার্ক সম্পর্কে- 

Difference between zoo and safari park 

Zoo is the place where people are free and the animals are confined. On the other hand, the environment is opposite in a safari park in which jungle environment is maintained. The safari park is much better than any kind of zoo. 

সাফারি পার্কের অবস্থান ও আয়তন 

ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা – ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সাফারী পার্কটির অবস্থান। আমি এখানে জিপিএস এর মাধ্যমে গুগল ম্যাপ দিয়ে লোকেশানটা দেখিয়ে দিলাম-কাজে লাগবে। 


Bus fare from Dhaka to Bagher Bazar: Per person TK 50(normal), TK 80 (sitting service) 


Auto rickshaw fare from Bagher Bazar to Safari Park: Per person TK 15 

সাফারী পার্কের আয়তন ৩৬৯০.০ একর। এর মধ্যে ৫৫০.০ একর ব্যাক্তি মালিকানধীন ভূমি রয়েছে যা সিংহভাগ অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে ৩৪০০.০ একর এলাকায় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে এবং ৪০০.০ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন বাইদ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট এলাকা পর্যায়ক্রমিক ভাবে উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। বাঘের বাজারের প্রবেশ পথে বাঘের মডেল সম্বলিত ফটক নির্মাণ করা হয়েছে।থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের সাফারী পার্কের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে এ পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। 

সাফারি পার্ক 

এখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, তথ্য ও শিক্ষাকেন্দ্র, নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম, পার্ক অফিস, বিশ্রামাগার, ডরমিটরি, বন্যপ্রাণী হাসপাতাল, কুমির পার্ক, লিজার্ড পার্ক, ফেন্সি ডাক গার্ডেন, ক্রাউন্ড ফিজ্যান্ট এভিয়ারি, প্যারট এভিয়ারি, ধনেশ পাখিশালা, ম্যাকাউ ল্যান্ড, মেরিন একোয়ারিয়াম, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি বাগান, ক্লাইমেট হাউজ, ভালচার কর্নার, ঝুলন্ত ব্রিজ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ফোয়ারা, বাঘ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, ইকো-রিসোর্ট, ফুট কোর্ট, এলিফেন্ট শো গ্যালারি, বার্ড শো গ্যালারি, এগ ওয়ার্ল্ড ও শিশুপার্ক। 

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে আছে ২৬ প্রজাতির কয়েক হাজার পশু ও পাখি, যার মধ্যে আছে ১১টি বাঘ, তিনটি সাদা সিংহসহ ১০টি সিংহ, ১০০টি ময়ূর, দুই শতাধিক হরিণ, চারটি জিরাফ, ছয়টি জেব্রা, ১৩টি বন গরু, চারটি হাতি, পাঁচটি ভল্লুক ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এরা এখন পার্কে উন্মুক্ত বিচরণ করছে। 

এসব প্রাণী দেখার জন্য রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। 

বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীতে সাফারী বাস ও জিপে করে পর্যটকরা প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণরত বাঘ, সিংহ ও ভল্লুক দেখতে পারবেন। এছাড়া আফ্রিকান সাফারী পরিভ্রমণে জিরাফ, জেব্রা, ব্লু ওয়াইল্ড বিস্ট, ব্ল্যাক ওয়াইল্ড বিস্ট, ব্লেস বকসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখতে পারবেন। 

পার্কে প্রবেশ ফি 

প্রতিজন বয়স্ক ৫০টাকা, 
অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের নিচে) ২০ টাকা, 
শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা, 
শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থী গ্রুপ (৪০-১০০ জন) ৪০০ টাকা, 
শিক্ষা সফরে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ (১০০ জনের বেশি) ৮০০ টাকা, 
বিদেশি পর্যটকদের পাঁচ ইউএস ডলার প্রবেশ ফি ধার্য করা হয়েছে। 

পার্কিং ফি 

প্রতিটি বাস/কোচ/ট্রাক ২০০ টাকা, 
মিনিবাস/ মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, 
কার/জিপ ৬০ টাকা, 
অটোরিকশা ২০ টাকা। 

গাড়িতে সাফারী পার্ক পরিদর্শন অপ্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিজন ৫০ টাকা, 
বয়স্ক প্রতিজন ১০০ টাকা। 
এছাড়া ক্রাউন্ড ফিজ্যান্ট এভিয়ারি পরিদর্শন ১০ টাকা, 
ধনেশ এভিয়ারি ১০ টাকা, 
প্যারট এভিয়ারি ১০ টাকা। 

Food Arrangement 

Outside food are not allowed. You can have your food from "Tiger Restaurant" or "Lion Restaurant" inside Bangabandhu Sheikh Mujib Safari Park. 

Lunch: 160 Tk ( Chicken Birany) You may take or change your food with extra payment. 


Photo Credit: Onyrul Anam

Wednesday, September 4, 2013

ডে লং টুর এট মানিকগঞ্জ

.
মানিকগঞ্জ যাব যাব করে যাওয়াই হচ্ছিল না সেই ২০১০ সালের পর, ২০১০- আইইউবির এলএফই (LFE-Life in Field Experience) করে মানিকগঞ্জ সম্পর্কে যে ধারনা ছিল তা হল- এই এলাকার খাবার দাবার খুব সস্তা, খাবারে ভেজাল কিছু নাই, একেবারে মাঠ থেকে শাক-সবজী উঠিয়ে রান্না করলে যেই স্বাদ সেইটাই পেয়েছিলাম। আর প্রশিকার রেস্ট হাউজে থাকতাম কইট্টাতে (কইট্টা হল মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার একটা গ্রাম) খাবারের বেলায় একটু কিপটামি করসিল সেই সময়। তাই বাইরের খাবারের সম্পর্কে সেই সময় বেশী ধারনা পাই নাই। কিন্তু ২০১০ সালের ১২ দিনের জন্য এলএফই ছিল অন্যরকম একটা অনুভুতি। জিসান স্যার, কুতুবি ম্যাডাম, লতিফুল স্যারদের আন্তরিকতা আজও মনে পড়ে। অনেক স্মৃতি আছে, যা লিখে প্রকাশ করার মত না, মনিটরের মাঝে তপু ভাই, ফাহমি, আর জোকার তমাল ছিল অসাম। আর আমার রুমমেট? হাহা না বললেই নয়-ফসু আর তুশান। শয়তানি বানদ্রামি কম করি নাই মিসিং অল সামার১০ এলএফই মেম্বারস। সেইসব কাহিনী আগে লিখা লিখি করেছি ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সেই ১২ দিনের কাহিনী লিখতে বসলে লিখে আজ আর শেষ করা যাবে না সংক্ষেপে তাই আজ বললাম। মানিকগঞ্জ গেলে আজীবন এলএফইয়ের কথা মনে পড়বেই












.
আবার সেই আধাচেনা মানিকগঞ্জ গেলাম ০৪/০৯/২০১৩, বুধবার অনি, জিথিয়া, আর রানাকে নিয়ে। সকাল সাড়ে সাতটায় বৈশাখী বাস কাউন্টারে গিয়ে বাসে উঠলাম নতুন বাজার থেকে, আগের রাতে আমি ঘুমাইছি .৩০- সারারাত মুভি দেখে মাদ্রাজ ক্যাফে, তাই মাত্র ঘন্টা ঘুমিয়েই .৩০- উঠেই দৌড়। সবাই বাসে উঠে আলাপ সালাপ করতে করতে গাবতলি এসে গেলাম .৩০, নাস্তা খেয়ে মানিকগঞ্জের বাসে উঠেই আব্বুর অফিস থেকে ফোন বার বার- কই তোরা, কতক্ষন লাগবে, কোন বাস? আবার কতক্ষন পর পর একই কথা -কই তোরা, কতক্ষন লাগবে, এখন কই? আমার আব্বা এরকমই
সাটুরিয়া গোলরাতে নেমেই গাড়ীর মালিকের ফোন আংকেল গোলরা নামলেই আমার গাড়ী পাবেন, ড্রাইভারকে বলা আছে যাই হউক গাড়ী নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম পাবো কিনা, বাট লাস্টে পেয়ে হাফ ছেড়ে বাচলাম নইলে ঢাকা কেমনে আসতাম তা জানি না!! এরপর গাড়ী নিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা কার্যালয় গেলাম, গিয়ে আব্বার সুবাদে চা-নাস্তা খাইলাম সবাই আমরা। তারপরই আমাদের আসল যাত্রা শুরু!




বালিয়াটি নিয়ে পড়ুন-
মানিকগঞ্জ জেলার পুরাকীর্তির ইতিহাসে বালিয়াটির জমিদারদের অবদান উল্লেখ যোগ্য। বালিয়াটির জমিদারেরা ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে আরম্ভ করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গেছেন যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে। বালিয়াটির পাঠান বাড়ীর জমিদার নিত্যানন্দ রায় চৌধুরীর দুছেলে বৃন্দাবন চন্দ্র রায় চৌধুরী এবং জগন্নাথ রায় চৌধুরীর মাধ্যমে বালিয়াটির নাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। মূলত ৫টি স্বতন্ত্র ব্লক নিয়ে গড়ে উঠলেও এই জমিদার বাড়ি বা প্রাসাদের সবগুলো ভবন একই সময়ে নির্মিত হয়নি। বরং বালিয়াটি জমিদার বাড়ির বেশ কয়েকজন সদস্য উনবিংশ শতকের মধ্য ভাগ থেকে বিংশ শতকের প্রথম ভাগের বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে এটি নির্মাণ করেন যার গোড়াপত্তন করেছিলেন গোবিন্দ রাম
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি একজন লবণের বণিক ছিলেন। এই পরিবারের উত্তরপুরুষদের মধ্যে কিশোরীলাল রায় চৌধুরী এবং রায় বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে তাদের অবদানের জন্য প্রখ্যাত ছিলেন। বালিয়াতি প্রাসাদটির নির্মাণ ঢঙে ঊনিশ শতকের রেনেসাঁ প্রভাবের ছাপ সুস্পষ্ট। এই বিশাল প্রাসাদটি ২০ একরের চেয়ে বেশি স্থানজুড়ে অবস্থিত। আসলে এই প্রাসাদটি একই রকম দেখতে কিন্তু ৫টি স্বতন্ত্র ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল যার মধ্যে একেবারে পূর্বদিকের ব্লকটি ছাড়া বাকি ৪টি ব্লক এখনও বিদ্যমান। এর মধ্যে মাঝের দুইটি ব্লকের একটি দ্বিতল এবং অন্যটি টানা বারান্দা ত্রিতল বিশিষ্ট। প্রাসাদের ৪টি ব্লকের পেছনের দিকে আলাদা করে ৪টি আলাদা অভ্যন্তরীণ ভবন বা অন্দরমহল রয়েছে
অন্যদিকে, উত্তরে কিছুটা দূরে অবস্থিত পরিত্যক্ত ভবনটি ছিল কাঠের কারুকাজ সম্পন্ন বাহিরমহল। মূলত প্রাসাদের ভৃত্যদের থাকার জায়গা, গাড়ি রাখা বা ঘোড়াশাল হিসেবেই এটি ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করা হয়। ছাড়া বিশাল প্রাসাদটিতে উঁচু দেয়ালের বেষ্টনী এবং অর্ধবৃত্তাকার খিলান আকৃতির সিংহ খোদাই করা ৩টি তোরণাকৃতির প্রবেশ পথ রয়েছে
বালিয়াটিতে আজও দুবেলা রাধা বল্লব পূজো হচ্ছে। বালিয়াটিতে ১৯২৩ সালের দিকে জমিদার কিশোরী রায় চৌধুরী নিজ ব্যয়ে একটি এলোপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি সরকারী নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। জমিদার হীরালাল রায় চৌধুরী সাটুরিয়া থেকে বালিয়াটির প্রবেশ পথের পাশে কাউন্নারা গ্রামে একটি বাগানবাড়ী নির্মাণ করেন যেটা সাটুরিয়া উপজেলা কার্যালয় বলে পরিচিত এখন এবং সেখানে দিঘির মাঝখানে একটি প্রমোদ ভবন গড়ে তোলেন যেখানে সুন্দরী নর্তকী বা প্রমোদ বালাদের নাচগান পান চলতো। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদের রক্ষনাবেক্ষণ করছে
বালিয়াটিতে অনেক ফটো তুলার পর, (অনির মেইনলি মানিকগঞ্জ যাওয়া বালিয়াটিতে ফটো তুলার জন্যে। তারপরও জানি না কতটূকূ মনের মত তুলতে পারছে , সেই জানে।কমেন্ট আশা করবো)




পথের মাঝে আব্বু আমাকে ফোনে বলে দুপুরে কই খাবি তোরা? আমি বলি আমরা তো কোথাও গেলে বাইরেই খাই, আমার আব্বা তো আর জানে না যে আমরা বগালেক গিয়া পাহাড়ী জুমের ভাত-ডাল ডিম খাইছিলাম, বাপের কাছে একটু পার্ট নিতে গেছিলাম তাই আব্বার কাছে আবারো বোকা হইলাম!! কয় আইচ্ছা খাইও।
বালিয়াটি গিয়া শুনলাম আমাদের জন্য রান্না হইছে আব্বার বাসায়, যাইতে বলছে-ফোন দিল আরেক আংকেল, আহা আমাদের আর পায় কে?
রানাকে কইতেছিলাম- বাসায় গিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া দরকার ফিলিং জমিদার এট বালিয়াটী!!






ফিরার পথে মনটাই খারাপ হয়ে গেলো অনি তার সানগ্লাসটা হারাইছে
দুপুর ৩টার দিকে আব্বার বাসা বাদশা ভবন- (আনকমন একটা নাম-বাসায় আমি আম্মু আর রথী এই নাম নিয়ে অনেক হাসা হাসি করি, আব্বু কিন্তু জানে না) এসে হাত মুখ ধুয়ে খানা পিনা দিলাম সেইরাম! রুই মাছ ভাজা, মুরগি, মুগ ডাল মাছের মাথা দিয়ে ভাত আর কে পায় আমাগো? খাবারের কথা কি আর ভুলা যায়? খাইয়া তো আব্বার বিছানায় সবাই সুইয়া গা এলাইয়া কয় ঘুম দিলাম! হাহা
তার আগে তো সাটূরিইয়াতে যে দই খাইলাম আর মিষ্টী খাইলাম লাইফে মনে হয় কোনদিন ভুলবোনা, মারাত্বক ছিল, এরকম দই আর দই এর উপর যে সর বসছে খেয়ে অনেক শান্তি পাইছি সবাই, যে চা খাইছিলাম গরুর দুধের চা। সেইরাম মজা






বিকালে মানিকগঞ্জের পদ্মার পাড়ে গেলাম জীবনে প্রথম, ছোটকালে লংগদু রাঙ্গামাটিতে থাকা অবস্থায় নদীর পাড়ে নাকি যাওয়া হত আমাকে কোলে নিয়ে, সেই সময় বুঝ হয়নি বলে পাড় কোনদিন এভাবে নেমে দেখা হয়নি আবার এক পাড় থেকে আরেক পাড় নৌকা দিয়ে পারাপার- ফিলিংসটা অন্যরকম। আরেক পাড় হল কিন্তু চর-চরের নাম আন্ধার মানিক, চরে গিয়ে আরেকটা বাগান বাড়ী দেখলাম, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছিলো দেখে আবার পাড়ের কাছে আসলাম নৌকা দিয়ে পারাপার হবার জন্যে, আর সেই সময় আকাশ কালো হয়ে যে বৃষ্টি নামার লক্ষন দেখা দিলো মাঝ নদীতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম একটা সময়, যাক বৃষ্টি নামার আগেই গাড়ীতে উঠতে পারছিলাম নইলে কাঁকভেজা হয়ে ঢাকা আসতে হত সবাইকে




রাতারগুলে সিলেটে অবশ্য নৌকা ভ্রমন ছিল প্রায় ঘন্টার, ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে রাতারগুল সেটা গেলে বুঝবেন আপনি, আমি বুঝিয়ে বলতে পারবোনা সেই ফিলিংসটা
সব ছবির ক্রেডিট অনির কাছে যাবে
জানি না ট্যুরটা বাকি সবার কাছে কেমন লেগেছে, আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে, সবাইকে থ্যাংস না দিয়ে পারতেসিনা
জিথিয়াকে শীতকালে আবার যেতে বলব-সরিষার মাঠে তুঝে দেখা তুই ইয়ে জানা সানাম মার্কা একটা ছবি তুলার জন্যে। আর অনি সরিষার মাঠে তোমাদের ছবি তুলার জন্যে আমাকে তো ফটোগ্রাফার হইতেই হবে তাই নয় কি?

আর শত ব্যস্ততার মাঝে রানাকে পেয়ে অনেকদিন পর সবারই ভালো লাগছে, নইলে জমতো না!!
.
এক নজরে মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৫ সালের মে মাসে। মানিকগঞ্জ মহকুমা প্রথমে ফরিদপুর জেলার (১৮১১ সালে সৃষ্ট) অধীন ছিল। প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন কল্পে ১৮৫৬ সালে মানিকগঞ্জ মহকুমাকে ফরিদপুর জেলা থেকে ঢাকা জেলায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ০১ মার্চ ১৯৮৪ সালে মানিকগঞ্জ কে জেলায় উন্নীত করা হয়
আয়তনঃ ১৩৭৮.৯৯ বর্গ কিঃমিঃ
মানিকগঞ্জের প্রধান টি নদী-
পদ্মা
যমুনা
ধলেশ্বরী
ইছামতি
কালিগঙ্গা
দর্শনীয় স্থানঃ
সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি প্রাসাদ বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, শিবালয়ে তেওতা জমিদার বাড়ী নবরত্ন মঠ, সদর উপজেলায় কবিরাজ বাড়ী, সিংগাইর রফিক নগরে শহীদ রফিক জাদুঘর, হরিরামপুর ঝিটকায় পোদ্দার বাড়ী যাত্রাপুরে স্বপ্নপুরী
মানিকগঞ্জের পুরাকীর্তির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা-
বালিয়াটি প্রাসাদ, সাটুরিয়া
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে যাওয়া যায়্। মানিকগঞ্জ হতে দূরত্ব ১৮ কিঃ মিঃ। বাসভাড়া ১৫/- টাকা। রাত্রিযাপনের কোন ব্যবস্থা নেই
তেওতা জমিদার বাড়ী, শিবালয়
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে শিবালয় যেতে হয়। দুরত্ব ২২ কি:মি: বাসভাড়া ১৫/- টাকা। সেখান থেকে টেম্পু /রিক্সাযোগে যাওয়া যায়্। দূরত্ব কিঃমিঃ। টেম্পুভাড়া ১৫/- টাকা। রিক্সাভাড়া ৪০/- টাকা। রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা নেই
তেওতা নবরত্ন মঠ, শিবালয়
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে শিবালয় যেতে হয়। দূরত্ব ২২ কিঃমিঃ। বাসভাড়া ১৫/- টাকা। সেখান থেকে টেম্পু /রিক্সাযোগে যাওয়া যায়্। দূরত্ব কিঃমিঃ। টেম্পু ভাড়া ১৫/- টাকা। রিক্সাভাড়া ৪০/- টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
মানিকগঞ্জের মত্তের মঠ
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ শহর থেকে রিক্সাযোগে/পদব্রজে যেতে হয়। দূরত্ব কিঃমিঃ। রিক্সাভাড়া ২০/২৫ টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে যাওয়া যায়। দূরত্ব ১৮ কিঃমিঃ। ভাড়া ১৫/- টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
শিব সিদ্ধেশ্বরী মন্দির
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ শহর থেকে রিক্সাযোগে/পদব্রজে যেতে হয়। দূরত্ব কিঃমিঃ। রিক্সাভাড়া ২০/- টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
মানিকগঞ্জের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ী
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ মানিকগঞ্জ শহরে অবস্থিত। দূরত্ব কিঃমিঃ। রিক্সাভাড়া ২০/২৫ টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
মানিকগঞ্জের গৌরাঙ্গ মঠ
যাতায়াত ব্যবস্থাঃমানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে যাওয়া যায়্। দূরত্ব ১৮ কিঃমিঃ। ভাড়া ১৫/- টাকা। রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা নেই
মাচাইন গ্রামের ঐতিহাসিক মাজার পুরোনো মসজিদ
যাতায়াত ব্যবস্থাঃমানিকগঞ্জ থেকে সড়ক পথে বাসযোগে টেপড়া যেতে হয়। দুরত্ব ১৫ কিঃমিঃ। ভাড়া ১০/- টাকা।সেখান থেকে টেম্পু /রিক্সাযোগে যাওয়া যায়। দূরত্ব কিঃমিঃ। টেম্পুভাড়া ১৫/- টাকা। রিক্সাভাড়া ৫০/- টাকা