Thursday, August 23, 2018

মালয়েশিয়ায় প্রথম দিন

মালয়েশিয়ায় যাবো যাবো করে এক বছর ধরে প্ল্যান হচ্ছিলো। কিন্তু পার্টনারের অভাবে যাওয়া হয়নি গত বছর। এবারও সেই সেইম সমস্যা পার্টনার পাচ্ছিলাম না। আমার বন্ধু আলি বললো ব্যাটা একা আয় আমি আর স্যান্ডি আছি আর কি লাগে? সেই কথায় বললাম ব্যাটা আমার ভিসা লাগা। আইতেছি। তারপর আলি ১৫ দিনের মাঝেই আমার মালয়েশিয়ান ভিসা করাই দিলো। আর ৫ দিনে সিঙ্গাপুর ভিসা লাগাই দিলো।

চলে এল সেই দিন, সকাল সকাল ব্যাগ রেডি করে সন্ধ্যায় খেয়ে বের হলাম এয়ারপোর্টের দিকে। বাসা থেকে এয়ারপোর্ট ১০ মিনিট লাগে আমার। আর্লি ওয়েব চেক ইন করে নিলাম মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সে।


ইমিগ্রেশান শেষ করে বসে রইলাম। সিল টিল দিয়া দিলো, কত কাহিনি মারাইলো আমাগো ইমিগ্রেশান। আসলে ভাবে কথা কইলে সব শালা কনফিউজড হয়, ভাবের উপর পালটা ভাব নিলে ব্যাটারা পাল্টা কনফিউজড হয়। এইটাই আসল কথা আমাগো দেশের ইমিগ্রেশান পার হতে মনে রাখবেন। আলিকে কল দিলাম, দোস্ত কাল সকালে দেখা হবে। অনেক আলাপ সালাপ হল। রাত ২ টায় ফ্লাইট ছিল। ২.৩০ বাজাইছে বোর্ডিং -এ।


জেনে রাখা ভালো আমার মালায়শিয়া ভিসা করতে কি কি পেপার্স লেগেছে বলে দেই। অনেকেই আজাইয়া কথা বার্তা বলবে, অনেক এজেন্ট ফাউ, কিছু জানে না (আমাদের দেশে ব্যাঙ্গের ছাতার মত মেলা ট্রাভেল এজেন্ট জন্মাইছে, সো সাবধান) হাজার এক্সকিউজ দিবে। আর ভিসার জন্য পেপার্স সব ওকে থাকবে/ভ্যালিড থাকবে/ট্রু থাকবে তাইলে আপনি ভিসা পাবেন। 



১. পাসপোর্ট ৬ মাসের ভ্যালিডিটি থাকতে হবে
২. ছবি ২ কপি (ম্যাট পেপার্স) 35 mm x 50 mm
৩. Letter of Introduction and Salary Certificate cum Employment cum Leave acceptance Certificate 
৪. 2 Business Card
৫. 6 Months Bank statement of Salary Account, Solvency Certificate of Salary Account with seal and bank's letter head page (Must have 1.5 Lac BDT on last day balance)
৬. 6 Months Bank statement of other Savings Account, Solvency Certificate of Savings Account with seal and bank's letter head page. (Must have 1.5 Lac BDT on last day balance)
৭. Credit Card copies /last months credit card e-statements
৮. National ID Card photocopy
৯. Birth Certificate
১০. Air Ticket booking copy/Itinerary for round-trip flight 
১১. Hotel Booking copy
১২. Fully completed and duly signed application form

এই সব ডক আমি আলির ঘুরে আসি ট্যুর প্ল্যানার কে দিয়ে দিয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ ১২ দিনে আমার মালায়শিয়ান ভিসা পেয়ে গিয়েছিলাম, কোন ঝামেলা ছাড়াই। এবার আসল কথায় আসি, প্লেনের টিকেট কেটে রেখেছিলাম আমি এক মাস আগেই সেই আলির মাধ্যমেই। কিন্তু আমার সিঙ্গাপুর ভিসা তত দিনে না হবার কারনে আমি ৭ দিন পিছাই জার্নি ডেইট। আর সেখানেই অনেক টাকা যায় গচ্চা। সেই যাই হউক আমি প্লেনে উঠার সময় খেয়াল করলাম আমার সাথের কার ৯৯% বাংগালি যারা মালায়শিয়ায় যাচ্ছে কাজের জন্য। আমাকে কেউ যখন জিজ্ঞেস করে ভাই কই কাম করতে যাইতেছেন, আমি কই কিয়ের কাম? আমি তো ঘুরতে যাই। অনেকেই অবাক হয়ছে এই কথা শুনে। সে যাই হোক কথা তেমন বাড়াই নাই। আমি আমার মত বসে বসে ভাবতেছি কখন যামু, কেমনে নামার পর হোটেল যামু, গুগল করছিলাম।  রাত ২.৩০ এ প্লেনে চেপে বসলাম, ২.৪০ এর দিকে ছেঁড়ে দিল। খানা পিনা আর ঘুমেই ৩ ঘন্টা কেটে গেল। কান বন্ধ হয়ে ছিল ৩ ঘন্টা। 

 

জার্নিটা ভালই ছিল। ভাবছিলাম ৩ ঘন্টায় কুয়ালালামপুর নেমে যাচ্ছি। আর আমি ১৭ বার ১৭ ঘন্টা লাগাই লাগাই কক্সবাজার যাইতাম। ভাবতে ভাবতেই নেমে পড়লাম। ্নামার পর দেখি আরেক কাহিনি, বাপরে অনেক বড় এয়ারপোর্ট, এক টার্মিনাল থেকে আরেক টার্মিনাল যাইতে দেখি ট্রেন লাগে। ইমিগ্রেশান পর্যন্ত আসতে প্রায় আমার ১৫ মিনিট হাটা লেগেছে। ব্যগেজ সিস্টেম টাও খুব সুন্দর। টিভিতে দেখাচ্ছে কোন বেল্টে আসবে, সেখানেই দাঁড়ালাম, চলে আসলো ১০ মিনিটেই। কোন হ্যাসেল নাই । আমাদের দেশের সাথে তুলনা করলে তারা আমাদের থেকে ৩০ বছর এগিয়ে আছে। আমি তুলনা দিলে অনেক কিছুই দিতে পারতাম। কিন্তু একটা জিনিষ না বললেই নয় আমি সেখানে নিজে যাবার পর ৭ দিনে চেইঞ্জ হয়ে গিয়েছিলাম। এত সুন্দর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটা দেশ, নিজ থেকে ময়লা ফেলতে গেলেও খারাপ লাগতো, দরকার হলে ১০ মিনিট হেটে ময়লার বক্স বের করে ময়লা ফেলতাম।  

ইমিগ্রেশান ক্রস করেই বের হবার আগেই সিম কিনলাম। বাস টার্মিনাল না খুঁজে গ্র্যাব কল কলাম। 


Grab না থাকলে আমার মালায়শিয়া জার্নি এত আরামের হত না। সো যারাই যাবেন, এই এপটা নামাবেন, উবারের মত কাজ করে। অনেক আরামে জার্নি করতে পারবেন, খরচও অনেক কম। গ্র্যাবের ড্রাইভাররা অনেক স্মার্ট। আমাদের দেশের উবার ড্রাইভারগো মত না, ফোন দিয়ে জিগাবে ভাই আপনে কই আছেন? কই যাইবেন? কোন রাস্তায় আসুম? কোন চিপায় ঢুকুম? ভাই রাস্তা খারাপ আপনে সামনে আসেন, ৫০ টাকা বকশিশ দিয়েন। শালার এসব ক্যাচাল থেকে ৭ দিন আরামে আছিলাম।  সব ড্রাইভার জিপিএস/গুগল নেভিগেশান ইউজ করে করে আমাকে বের করতো। কেউ কোনদিন ফোন দিয়ে আউল ফাউল ও জিগায় নাই। 

হোটেলে খুব সুন্দর করে আমাকে নামাই দিল গ্র্যাব ড্রাইভার। আমার হোটেল থেকে ৫৫ কিমি দূরে ছিল এয়ারপোর্ট। রাস্তায় কোন জ্যাম নাই। মানুষের ঠেলা ঠেলি নাই। লাইন/লেন মেনে গাড়ি চালাচ্ছে সবাই।





এই হল আমার দিনের প্রথম ভাগের কাহিনী। এই যে লম্বা টাওয়ারটা দেখছেন ১৭০ তলা হবে এটা। যেটা ৬০ কিমি দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। তাদের টুইন টাওয়ারকেও ছাড়িয়ে যাবে এটা। 

INN B Park Hotel এ আমার হোটেল বুকিং ছিল, সেটা Bukit Bintang-এ। সুন্দর এলাকা, ছিম ছাম পরিবেশ। নিট এন্ড ক্লিন রাস্তা ঘাট। INN B Park Hotel ছিল ফুল চায়না বেইজড একটা হোটেল, এখানে টিপিক্যাল বাংলাদেশিরা উঠে না।

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

INN B PARK HOTEL, 102-106, Jalan Imbi, Bukit Bintang, 55100 Kuala Lumpur

বাংলাদেশীরা উঠে সেই টুইন টাওয়ারের কাছে। সেটা তাদের খুব নাকি ভালো লাগে। এইদিকে আমার ভালই লেগেছিল। সব কিছুই হাতের নাগালে। দুপুরের দিকে আলি, স্যন্ডি আসলো দেখা করতে। গেলাম টাইম স্কয়ার মার্কেটে। ডলার ভাংগাইলাম, KFC তে বার্গার খাইলাম, ওমা একি খেলাম। আকাশ পাতাল তফাত পেলাম প্রথম বাইটে। খাচ্ছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম শালার কোন দেশে থাকি আমরা। আলিরা এখানে এসবে ইউজটু হয়ে গিয়েছে, সেটা বুঝা যাচ্ছিল। তাই তাদের সাথে তাল মিলানো কষ্ট, সেটা ধরতে আরো কয়েকদিন লেগে যাবে বুঝতে পারলাম। বাংলাদেশর পচা KFC খেয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়ে KFC এর পার্থক্য সেদিনই বুঝলাম। বাকি খাবার দাবারের টেষ্ট কেমন হবে সেটা আর বুঝতে বাকি রইলো না। সময় যাচ্ছে আর নতুন কিছু দেখছিলাম, সেই বেলায় আর বেশিক্ষন একসাথে থাকা হয়নি।

আলি, আমি, স্যান্ডি

আমি কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে নিলাম, ওরা আবার আসলো। বললো মামু আসো তোমাকে টুইন টাওয়ার দেখাই।


এই সেই পেট্রনাস টুইন টাওয়ার, অব মালয়েশিয়া। সেখানে বসেই আসলে আমাদের আগামীদিনের প্ল্যান প্রোগ্রাম করা হয়েছিল।

সামনে একটা পার্কের মত যায়গা। খুব সুন্দর এলাকা। অনেক অনেক ফরেইনার আসছিল, ছবি তুলছিল। এছাড়া বাচ্চা নিয়ে বাবা মায়ের আনাগোনা ছিল দেখার মত। সেই দেশ যে বাচ্চাদের নিয়ে এত চিন্তা করে সেটা বুঝা যায় তাদের স্থাপনা দেখেই। ফিউচার জেনারেশানের জন্য তাদের বিনোদনের অনেক কিছু রেখেছে। আর আমি ভাবছিলাম দেশের কথা। আহা হতাশ হয়ে গেলাম।

এখানে মাগরিব হয় রাত ৮টায়। এরপর ডিনারের জন্য গেলাম ম্যাক ডোনাল্ডসে। ঘুরে ফিরে সেই একই কথা, আকাশ পাতাল তফাত পেলাম প্রথম বাইটে। খাচ্ছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম শালার কোন দেশে থাকি আমরা।


বার্গার আর এক রিঙ্গিতের ভ্যানিলা আইস্ক্রিম খাইতে খাইতে রাত ৯.৩০ বেজে গেল। আজকের মত এখানেই সমাপ্তি, আগামিকালের ট্রিপ হবে Genting Highlands. সেই নিয়ে রাতে কিছুক্ষন গুগল করলাম হোটেলে বসে বসে।

Genting Highlands – located just 45 minutes away from the Kuala Lumpur – tops the list for a quick holiday getaway in Malaysia. Boasting round-the-clock exciting entertainment, this nippy hill station – perched approximately 1800 metres above sea level – is immensely popular for its Vegas-style casino and its indoor and outdoor theme parks. Bask in the salubrious mountain air while you enjoy the host of entertainment options; ride South East Asia’s longest – and the world’s fastest – cable car system, roll the dice at the exclusive Casino de Genting – Malaysia’s only casino – or spend the day enjoying the thrills and spills of the wildly popular indoor and outdoor theme parks. Genting’s cool mountain air makes jungle trekking, star gazing and firefly watching an infinitely pleasurable experience; if you’re looking for an adrenaline rush, you can also take part in abseiling, indoor rock climbing and flying fox activities to get your blood pumping.

Genting Highlands