Wednesday, October 19, 2016

বান্দরবন মানেই পাহাড়ি পথ ও ঝর্ণার দেশ

বান্দরবান মানেই পাহাড়ের দেশ, বান্দরবান মানেই সবুজের দেশ, বান্দরবান মানেই ঝর্ণার দেশ। আর ঝর্ণা শব্দটাই কেমন যেন রিনিঝিনি ছন্দময় আনন্দময় আবহ জাগায় শরীর ও মনে। ইচ্ছে হয় ওর পানির সৌন্দর্য্য আর শীতলতায় ধুয়ে ফেলি জীবনের সব কালিমা।
** কেওক্রাডং বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা ৩১৭২ ফুট। এটি বাংলাদেশের বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত। এক সময় এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ছিল। যদিও আধুনিক গবেষণায় এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সাকাহাফং বা মদক তুং। দূর থেকে কেওক্রাডংয়ের চূড়াকে ধোয়াটে মনে হয়। সাদা মেঘে ঢাকা। হওয়ায় ঝাপটায় দাঁড়ানো দায়। বৃষ্টি–বাতাস-মেঘ সময় সময় দখল নেয় চূড়ার আশপাশ।
Bandarban, keokradang, keo, kewkradang, keokaradang, কেওক্রাডং

**  বগালেক থেকে কেওক্রাডং এর পথে ঘন্টাখানেকের পাহাড়ি পথ পাড়ি দিলেই এই চমৎকার ঝর্ণাটা পাবেন, কিন্তু প্রাথমিকভাবে যেটুকু ঝর্ণা দেখা যায় এটুকুই কিন্তু চিংড়ি ঝর্ণা নয়। আসল টুকু দেখতে হলে আপনাকে বিশাল বিশাল পিচ্ছিল পাথরগুলো পেরিয়ে আর একটু ভেতরে ঢুকে ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘুরতে হবে। দেখবেন অসাধারণ একটি ঝর্ণা, যেন বাশ বাগানের মাথার অনেক উপর থেকে একেবেঁকে নেমে আসছে চমৎকার একটা স্রোতধারা।
** সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৭০০ ফুট উঁচু পাহাড়ে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট বগা লেক। ভূ-তত্ত্ববিদগণের মতে প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রাকৃতিক ভাবে পাহাড়ের চূড়ায় এই লেক তৈরি হয়। মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। কেওকারাডাং এর কোল ঘেঁষে বান্দারবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে এবং রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বগা লেক এর অবস্থান। পাহাড়ের উপরে প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে এই লেকের অবস্থান। শান্তজলের হ্রদ আকাশের কাছ থেকে একমুঠো নীল নিয়ে নিজেও ধারন করেছে সে বর্নিল রং। পাহাড়ের চুড়ায় নীল জলের আস্তর নীলকাশের সাথে মিশে তৈরি করেছে এক প্রাকৃতিক কোলাজ। মুগ্ধ নয়তে দেখতে হয় আকাশ পাহাড় আর জলের মিতালী। প্রকৃতি এখানে ঢেলে দিয়েছে একরাশ সবুজের ছোঁয়া। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আসার ক্লান্তি হারিয়ে যায় হ্রদের অতলগহ্বরে। সবকিছু মিলে এ যেন এক সুন্দরের লীলাভূমি।
** লুং ফের ভা সাইতার বান্দরবানে অবস্থিত একটি বিশাল ঝর্নার নাম। নাম যেমন কঠিন, এই ঝর্নায় যাওয়ার ট্রেইলও তেমন কঠিন। এখন পর্যন্ত হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন মানুষের পা পড়েছে এই ঝর্নায়। থিংদৌলতে পাড়া থেকে ‘তার পি’ ফলসও দেখে আসতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন অনেক বিপদজনক ট্রেইল এটা।
ট্রেইলঃ রুমা – বগালেক – কেওক্রাডং – থাইকং পাড়া – থিংদৌলতে পাড়া – সিলোপি পাড়া – লুং ফের ভা সাইতার।
লুং ফের ভা সাইতার, lung far ve saitar, saitar, lung fer va saitar, bandarban

** বান্দরবন (Bandarban) জেলার রুমা বাজার (Ruma Bazar) থেকে নদীপথে থানছি (Thanchi) যাওয়ার পথে পড়বে ঋজুক ঝর্ণা (Rijuk Waterfalls) । মার্মা ভাষায় একে রী স্বং স্বং বলা হয়। রুমা বাজার থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার এবং বান্দরবন সদর হতে ৬৬ কিঃমিঃ। সাঙ্গু নদীর পাড়ে প্রায় ৩০০ ফুট উচু থেকে সারা বছরই এ জলপ্রপাতটির রিমঝিম শব্দে পানি পড়ে। এই জলপ্রপাতে সারা বছর পানি থাকে। তবে বর্ষার সময় ঋজুক সাঙ্গুর বুকে এত বেশি পানি ঢালে যে প্রবল স্রোতের তোড়ে জলপ্রপাতের ধারে পৌঁছতে এমনকি বড় ইঞ্জিনের নৌকাগুলোরও বেগ পেতে হয়। তখন ঋজুকের সৌন্দর্য একেবারেই অন্য রকম। তবে শুকনো সময়েও বেশ ভালো পরিমাণেই যৌবন থাকে তার।
** পাইন্দু সাইতার/ তিনাপ সাইতার বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে অবস্থিত যা এখন বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত। যেতে হলে হেঁটে পাড়ি দিতে হবে ৪০ কিলোমিটার পথ। আবার সেই পথেই ফিরে আসতে হবে। বম ভাষায় সাইতার শব্দের অর্থ ঝরনা। পরে অবশ্য গিয়ে জানা যায় ঝরনাটির নাম তিনাপ সাইতার।
পাইন্দু সাইতার, তিনাপ সাইতার, paindu saitar, tinap saitar, bandarban

বান্দরবান পৌঁছে বাস থেকে নেমে রোয়াংছড়ির বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে যেতে হবে রোয়াংছড়ি। সেখান থেকে গাইড নিয়ে ২৩ কিমি হেঁটে যেতে হবে রনিন পাড়া। রাতে রনিন পাড়ায় থেকে পরের দিন ৪/৫ ঘণ্টা হেটে (হাটার গতি ও স্ট্যামিনার উপর নির্ভর করে সময় বেশি বা সামান্য কম হতে পারে) পাইন্দু খাল ও বিশাল পাহাড় পেরিয়ে যখন চোখের সামনে অকস্মাৎ উদিত হয়, এই তিনাপ সাইতার, সকল কস্ট, বেদনা নিমেষে পরিণত হয়, অদ্ভুত এক ভালোলাগায়, অদ্ভুত এক মাদকময় নেশায়।
পাইন্দু সাইতার, তিনাপ সাইতার, paindu saitar, tinap saitar, bandarban

**বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় আশ্চর্য সুন্দর নাফাখুম জলপ্রপাতটি অবস্থিত। বান্দরবন হতে ৭৯ কিমি. দুরে অবস্থিত থানচি। এটি একটি উপজেলা। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে। প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতী। মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় এই নাফাখুম জলপ্রপাতে। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুম এ এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়। প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই।
নাফাখুম, amiakhum, nafakhum, nafa kum, nafa, kum, khum, bandarban

** বান্দরবন যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন ? অনেক জায়গা আছে বান্দরবনে ঘুরে দেখার ! এবং একসাথে সবগুলো ঘুরে শেষ করতে পারবেন না। একেক টা জায়গায় যাবার রুট একেকটা। সবগুলোর উপর ভিত্তি করে ১১টি রুট প্ল্যান করা হয়েছে।

এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন/ বান্দরবন গাইড

- বান্দরবন কোথায় কোথায় যাবেন, কিভাবে যাবেন, কত সময় নিবে, খরচ কত পড়বে !
- কার সাথে যোগাযোগ করবেন
- রিলাক্স ট্যুর এর ক্ষেত্রে কোণ স্থান গুলো টার্গেট করবেন
- এডভেঞ্চার ট্যুর, ট্র্যাকিং, হার্ড ট্র্যাকিং এর জন্য কোথায় যাবেন !
- পুরো বান্দরবনের ১১টি রুট প্ল্যান
- যাওয়ার জন্য আপনার যেসব প্রস্তুতি অবশ্যই অবশ্যই নিতে হবে
- মোবাইল নেটওয়ার্ক সহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য।