ছোট্ট শহর শ্রীমঙ্গল। দৃষ্টিজুড়ে সবুজ, উটের
পিঠের মতোন টিলা আর মনোরম চা বাগান- কোন স্থান ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে মেলে ধরবার
জন্য যথেষ্ট। আরও যা রয়েছে তা হচ্ছে লাউয়াছড়া বন যা এক কথায় অনবদ্য। রেইন ফরেষ্ট
হিসেবে খ্যাত এই বনে রয়েছে হরেক প্রজাতির বন্যপ্রাণী আর বৃক্ষাদি। রয়েছে ১৬৭
প্রজাতির বৃক্ষরাজি।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শ্রীমঙ্গল হতে মাত্র ১০
কিঃমিঃ আর ঢাকা থেকে ১৯৬ কিঃমিঃ। এর আয়তন
১২৫০ হেক্টর।
বিরল প্রজাতির উল্লুকের বাস এখানে। মোট ১৬টি
উল্লুক পরিবার হাজারো পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। উল্লুক গিবনস্ লেজ বিহীন বন্য
প্রাণী, অনেকটা বানরের মত। ভারত, চায়না,
মায়ানমার এবং বাংলাদেশসহ ৪টি দেশে ওদের প্রজাতি সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস
করছে। আর কোন দেশে উল্লুকের বসবাসের তথ্য পাওয়া যায়নি। উল্লুক সাধারণত পরিবারবদ্ধ
হয়ে কমপক্ষে ২ থেকে ৫ সদস্য
মিলে বসবাস করে। পুরুষ উল্লুক কালো রঙের এবং মহিলারা হয়ে থাকে সাদা ও বাদামী
মিশ্রিত। উল্লুক পাহাড়ের উচু ও বড় বড় গাছের ডালে বাস করে। সব চেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে
উল্লূকের হই হুল্লা ডাক। অনেক দুর থেকে শুনা যায় উল্লুকের ধ্বনি। যা চুম্বকার্ষনের
মতই টেনে নেয় পর্যটকদের।
এছাড়াও এই বনের উল্লেখযোগ্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে
বানর, চশমা বানর, মুখপোড়া
হনুমান, লজ্জাবতী বানর, মায়া
হরিণ, বন্য শুকর ইত্যাদি। ২৪৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে।
এরমধ্যে ৮ প্রজাতির সুচক পাখিও আছে। সুচক পাখির মধ্যে ভিমরাজ, পাহাড়ী
ময়না, কাওধনেস, বন মোরগ,
ফোঁটা কন্টি সাতভায়লা এবং শ্যামা। লাউয়াছড়ার নৈসর্গিক দৃশ্য আর
একটানা ঝিঁঝিঁ পোকার গুঞ্জন সত্যিই প্রশান্তি দেয় চোখ আর মনের।
শুধু কি তাই? বিভিন্ন
ধরণের হরিণ হয়তো অনেকেই দেখেছেন, কিন্তু মায়া হরিণ! হ্যাঁ, মায়া হরিণ অবলোকন করতে হলেও লাউয়াছড়া। ভোরে লাউয়াছড়ার
ফুট ট্রেইলে হাটতে থাকুন। চারদিকে র্নিঝুম আর নির্জনতা ভেদ করে পাহাড়ের মধ্য থেকে
ভেসে আসবে মায়া হরিণের ডাক! ভয়ের কিছু নেই, শব্দগুলো
পাহাড়ের গায়ে প্রতিধ্বনিত হয়ে পর্যটকদের কর্ণকুহরে মায়াময়ী ইন্দ্র জালের সৃষ্টি
করবে। হয়তো শরীরটা খানিক ছমছম করতে পারে, লাগতে
পারে রোমাঞ্চ!
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের গা ঘেষা রয়েছে ৩টি আদিবাসী পল্লী। আদিবাসি
২টি খাসিয়া ( মাগুরছড়া ও লাউয়াছড়া) ও ১টি ত্রিপুরাদের পাড়া। আদিবাসীদের জীবনযাত্রা
সাধারণত পাহাড়ী কৃষ্টি কালচারের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠে যা সাধারনের থেকে অনেক আলাদা।
আদিবাসিদের জীবনযাত্রা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য
ইত্যাদি দেখাও পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা।
জীব বৈচিত্র্য
মাত্র ২৭৪০ হেক্টরের আয়তন হলেও জঙ্গলটির
জীববৈচিত্র্য বিস্ময়কর রকমের সমৃদ্ধ। এখানে প্রায় ১৫৯ রকমের গাছগাছড়া পাওয়া যায়,
পাওয়া যায় ধনেশ, বন মোরগ, হরিয়াল
সহ প্রায় ১২০ রকমের পাখি। স্তন্যপায়ীদের মধ্যে আছে লজ্জাবতী বানর, আসামী
বানর, শূকর লেজী বানর সহ ৬ প্রজাতির বানর, কমলা
পেট কাঠবেড়ালী, খাটাশ, বন
বেড়াল, সোনালী শেয়াল,শূকর,
মায়া হরিণ, নানা রকম সরিসৃপ ও সাপ। তবে এখানকার সেরা আকর্ষন
হতে পারে উল্লুক, মাত্র ৭০ টির মত আছে এই জঙ্গলে এরা, এবং
উপমহাদেশে উল্লুকের সব থেকে বড় জনসংখ্যা এটি। বিপন্ন এই প্রাণিটির দেখা পাওয়া
অবশ্য ভাগ্যের ব্যাপার। পূর্বে এই জঙ্গলে বাঘ, চিতাবাঘ,
শম্বর হরিণ প্রভৃতি দেখা যেত, ৭০ এর
দশকের শুরুতেই এরা সংরক্ষণের অভাবে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
যেভাবে যাবেন :
প্রথমে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল । শ্যামলী হানিফ বাস ভাড়া ৩২০ টাকা ।
শ্যামলী ১ ঘণ্টা পর পর বাস আছে রাত ৯ :৩০ পর্যন্ত । হানিফ এর শেষ বাস ১১ :২০ ।
ট্রেন পারাবত সকাল ৬:৪৫ , জয়েন্তিকা ২:০০ , উপবন
রাত ১০:০০
কোথায় থাকবেন :
ট্রেন বা বাস যা দিয়ে জান না কেন , নামার
পর সামনে হাঁটুন অনেক হোটেল আসে।
ডবল রুম ৪০০-৬০০ , , ৬-৮ জন হলে ১ টা বড় রুম নিতে পারেন হোটেল
টি টাউন , হোটেল ইউনাইটেড ভাড়া ১১০০-১৩০০, পরিবারসহ
গেলে হোটেল প্লাজা তে থাকে পারেন , ফোন ০১৭১১৩৯০০৩৯
কিভাবে যাবেন লাউয়াছড়া
:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায়
অবস্থিত। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৯৬
কিলোমিটার, সিলেট শহর থেকে দূরত্ব হবে প্রায় ৬০ কিলোমিটার।
সিএনজি করে যেতে পারেন যাওয়া আসা ঘণ্টা খানিক
থাকা ৬০০ এর কম না। জিপ এ গেলে ভাড়া বেশী। বাস এ যেতে হলে রিক্সা করে চলে আসুন
ভানুগাছা রোড বাস স্ট্যান্ড , সেখান থেকে বাস ভাড়া ১০ টাকা করে।
যে বিষয়গুলো মনে রাখবেন
১। জঙ্গলে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না,
এই উদ্যান আমাদের জাতীয় সম্পত্তি, এর
রক্ষণাবেক্ষণ ও আমাদের দায়িত্ব
২। উচ্চস্বরে গান বাজনা করবেন না, কথা
বলবেন না। জঙ্গলের পশুপাখিদের নিজস্ব জগত আছে, আপনার
সরব উপস্থিতি দিয়ে নিশ্চয় তাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা ঠিক হবেনা।
৩। শীতকাল ছাড়া অন্য সময় গেলে খুব সাবধানে থাকবেন,
এই জঙ্গলে প্রচণ্ড জোকের উতপাত, জুতা
পরে জঙ্গলে ঢোকা শ্রেয়। ঘাড়, হাত, পা এ সতর্ক নজর রাখবেন, বিশেষ
করে ছড়ার আশেপাশে জোক বেশি থাকে। জোক কামড়ালে টেনে ছাড়াতে যাবেন না, লবণ
সাথে রাখবেন, লবণ ছিটিয়ে দিলেই কাজ হবে। লবণ না থাকলে
সিগারেটের তামাকেও কাজ চালাতে পারেন
৪। সাপের ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন
৫। জঙ্গলে দুর্বৃত্ত শ্রেণীর কিছু লোক থাকে,
এরা বন্য প্রাণি দেখানোর কথা বলে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যেয়ে ছিনতাই করে,
এদের ডাকে সাড়া দেবেন না
৬। জঙ্গলের ভেতরের রেল লাইন ধরে হাঁটাহাঁটি না
করাই ভাল, কিছুক্ষণ পর পর ট্রেন যাতায়াত করে এই রেলপথ দিয়ে,
অসতর্ক থাকলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
On the Vanugach-Komalganj Road about seven kilometres from
Sreemongol town is the entry to Lauachora National Garden. It is an evergreen
rainforest with excessive precipitation. Tall trees with their lofty branches
and soaring foliage make for a unique cover for the forest on a sunny day.
Lauachora is one of the seven safari parks and 10 national gardens in
Bangladesh. An area of 1,250 hectares from the 2,740-hectare West Vanugach
Reserve Forest was declared a national garden in 1996.
This forest is a sanctuary for rare species of plants
and animals that include endangered species of hoolok gibbon, phayre’s langur,
as well as a wide variety of apes, cats and snakes including pythons, in
addition to parrots, magpies and many other birds.
Upon payment of a certain amount of fee, one can visit the forest. There are
30-minute, one-hour and three-hour trails that can be walked with the help of
trained guides. A wide variety of plants, orchids, insects, birds and other
animals can be seen.
Even though it is not very large in size, this forest is a sanctuary for rare
species of plants and animals that include endangered species of hoolok gibbon,
phayre’s langur, as well as a wide variety of apes, cats and snakes including
pythons, in addition to parrots, magpies and many other birds.
Another Luxurious Resort Dusai also not far.
There are a good no of Guest houses and cottages are available around
Lawachera.
How to go there?
Lawachera is easily accessible from sreemongol town by own
drive or cng auto rickshaw. Tourist may come to sreemongol from Dhaka or Sylhet
by car or train.
Where to stay?
‘Grand Sultan Tea Resort & Golf’ is a luxurious
accommodation provider near Lawachera.
Where to eat?
At the Lawachera - Sreemongol road there are restaurants
from budget to luxurious. 'Kutumbari Restaurant' in the main town is one of
them.
Information you need to know?
Tourist are suggested to enter in the forest with
professional guides and follow their suggestions.