দ্বিতীয়বার সাজেক এবং খাগড়াছড়ি ভ্রমন সংক্রান্ত কিছু টিপস্ এবং ব্যক্তিগত কিছু অভিমত
সাজেক ইউনিয়ন (ইংরেজি: Sajek Union), বাঘাইছড়ি উপজিলার রাঙামাটি জিলায় যার আয়তন: ৪৩,৭৭৬ একর (বর্গ কিলোমিটার)।
খাগড়াছড়ির দিঘীনালা থেকে মারিশ্যা রাস্তার উপর দিয়ে কাচালাং পার হয়ে মাচালাং হয়ে রুইলুই পাড়ায় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন সাজেক ভ্যালীতে আসতে হবে। সাজেকে কি আছে যা নিয়ে এত হাউ কাউ? সাজেকের পাহাড় চূঁড়া থেকে মিজোরামের লুসাই পাহাড়ের অদ্ভুত দৃশ্য দেখে সকল ক্লান্তি ও কষ্ট নিমিষেই মিলিয়ে যায়।
১. এসি বাস এ খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে বেশ আগে থেকেই যাওয়া-আসা টিকেট কেটে রাখুন। কারন এসি বাস মাত্র একটাই। সেইন্টমার্টিন সার্ভিস এর মাত্র একটি করে বাস প্রতিদিন রাতে যাওয়া-আসা করে৷ এছাড়া আরো আছে শ্যামলী/ইকোনো/সোদিয়া/স্টার
লাইন (নন এসি)।
২. নিজেদের গাড়ি নিয়েও যাওয়া যায়। গ্যাস এর গাড়ি না নেওয়া ভাল৷ কারন গ্যাস এ চালিত গাড়ি তে উঁচু ঢাল উঠতে বেশ কষ্ট হয়। তাছাড়া ওদিকে গ্যাস ও নাই। তেল এ চালিত গাড়ি তে বেশ আরামেই খাগড়াছড়ি পর্যন্ত যাওয়া যায়। তবে ৪ হুইল ছাড়া সাজেক যাওয়া কষ্টকর। তবে গাড়ি তে এসি না চালিয়ে আর বিরতি দিয়ে দিয়ে গেলে যাওয়া যাবে৷ অনেকেই গেছে, যাচ্ছে।
সো প্রব্লেম হবে না।
৩. চান্দের গাড়ি তে সাজেক যাওয়াটা নিরাপদ। তবে ছাদে বসলে সাবধান থাকতে হবে। আর শরীর ও বেশ ব্যাথা হয়। ভাড়া ৫০০০-৭০০০ টাকা নিবে। খাগড়াছড়ি এর শাপলা চত্বর থেকেই অনেক চান্দের গাড়ি পাবেন।
৪. সাজেক এ তেমন কিছুই নাই। শুধু যাওয়ার রাস্তাটা জটিল সুন্দর, খাড়া পাকা রাস্তা। সাজেকের রুন্ময় রিসোর্ট টা দেখতে ভাল, তবে আহামরি কিছু নয়। থাকার ভাড়া অত্যাধিক এবং থেকে আর কিছু দেখার ও নাই, সাজেক রিসোর্ট তো আরো ব্যয়বহুল, তবে সেনাবিহিনী তে কেউ অফিসার লেভেল এর থাকলে ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়া আলো রিসোর্ট এবং রুইলুই পাড়া ক্লাব হাউস এ থাকা যায়। পাহাড়িদের বাসায় থাকলে ২৫০ টাকা প্রতিজনের খরচ আসবে।
FOR BOOKING PLEASE VISIT: REGIONOFFICERS’ CLUB KHAGRACHARI
৫. রুইলুই পাড়া আর কংলক পাড়াতে ও তেমন কিছুই নাই। এ দুটো আদিবাসি পাড়া শুধু মাত্র। আগে অনেক কিছু ছিল, এখন নাই। যারা বান্দরবান এর ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় গেছেন তাদের কাছে এগুলা ডাল-ভাত। খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আসি, পানির সমস্যা আপাতত দূর হয়েছে, ভাত ডাল (১৫০ টাকা) মুরগী (২৫০ টাকা) গরু (৩০০টাকা) খেতে পারবেন রক প্রশান্তি রেস্টুরেন্টে।
৬. সাজেক এর চেয়ে নিলগিরি (যা বান্দরবনের সবচেয়ে
ফালতু জায়গা), নিলাচল অনেক
সুন্দর।
৭. সাজেক থেকে ফেরার পথে বাঘাইহাটে নেমে ১৫ মিনিট হেটে ১০ নং হাজাছড়া ঝর্না দেখে আসতে পারেন। এটা বেশ সুন্দর।
৮. খাগড়াছড়ি শহর থেকে ১০কিলো দূরে আলুটিলা গুহা টা চরম। ভাল লাগবে নিশ্চিৎ।
৯. রিসাং ঝর্না আর অপু ঝর্না দুটোই মুটামুটি ভাল। তবে ছোট খাট ঝর্না।দেখে ভালোই লাগবে।
১০.মং রাজার বাড়ি পুরাই ভুয়া। তবে হার্টিকালচার পার্ক টা মুটামুটি সুন্দর।
১১. নিউজিল্যান্ড যে জায়গা টাকে বলে ওটাও ফালতু। কিছুই নাই।
১২. সবচেয়ে ফালতু সিস্টেম রেস্তোরার খাবার, এটা ওখানে বেশ নাম করা এবং ফেসবুকে ও বেশ কিছু রিভিউ পড়ে খেতে গেসিলাম, জঘন্য খাবার, সব পাহাড়ি রান্না, বাঁশ রান্নাটাও অতি জঘন্য, সবকিছুতে শুটকি দেয়। আর মাংসের দাম ৩০০ টাকা প্লেট!!! এর চেয়ে শাপলা চত্বর এর মনটানা / রাজধানী হোটেল অনেক ভাল।
১৩. খাগড়াছড়িতে থাকার জন্য সবচেয়ে ভাল জায়গা হচ্ছে গিড়ি থাবার, এটা ক্যান্টনমেন্ট এর ভিতরে আর্মিদের আন্ডারে। রেফারেন্স নিয়ে যেতে হয়। খুবই চমৎকার জায়গা। এ ছাড়া পর্যটন হোটেলেও থাকতে পারেন।
পরিশেষে
বলতে পারি,যারা বান্দরবান এর আমিয়াখুম, সাত ভাই
খুম, সেন্ডা ভো, রিজুক, কেওক্রাডাং
রেমাক্রি, বগালেক, জাদিপাই, নাফাখুম, নিলগিরি, নিলাচল ইত্যাদি জায়গায় গেছেন, তাদের কাছে সাজেক ভাল নাও লাগতে পারে। এই সবই আমার ব্যক্তিগত অভিমত৷ তাই নিজেরা গিয়ে দেখেন। গিয়ে, ঠেকে ঠেকে তারপর শেখেন।
কিছু মতামত দিয়েছেন- নবীন মজুমদার।
কিন্তু আমার কাছে প্রথমবারের সাজেক যাওয়া আসা, থাকা, খাওয়া, মজা করা, সবার ভালো কো-অপারেশন জাস্ট ওয়াও ছিল। পোস্টটা হল যারা দ্বিতীয়বার সাজেক যাবার প্ল্যান করছেন তাদের জন্যে।
সাজেক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে এপ্লিকেশনটিতে।
Here are some Sajek's Resorts/ Cottage owner mobile number! Hope it will help |
সাজেক নিয়ে Hello Tech এর উদ্যোগে একটি এন্ড্রয়েড এপ্স বানানো হয়েছে, চাইলে ডাউনলোড করতে পারেন নিচের লিঙ্ক থেকে।
এপ্স ডাউনলোড লিঙ্কঃ Sajek Tour Guide (সাজেক গাইড)
- কিভাবে যেতে হয়
- কোন যাতায়াতের ভাড়া কেমন
- সর্বমোট বাজেট কেমন লাগতে পারে
- কোথায় থাকার ব্যবস্থা আছে
- পাহাড়ি মাচায় থাকতে হলে কি করতে হবে
- ট্যুর গাইডের জন্য
- রিসোর্ট বুকিং এর জন্য কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে –এই তথ্য গুলো আছে এপ্লিকেশনটিতে।
সাজেক নিয়ে আমার আগের ব্লগ দেখতে পারেন-