Saturday, January 10, 2015

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ


খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মোট আয়তন ২৭০০ বর্গ কিলোমিটার। এই জেলার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য ও ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলাও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য অবস্থিত। খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় একে খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৭০০ সালে এই এলাটি কার্পাস মহাল নামে পরিচিত ছিল। তৎকালিন এর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোঃ এর সাথে একযুদ্ধে পরাজিত হয়ে তুলা কার্পাস) ট্যাক্স হিসাবে দিতে হতো।


প্ল্যান১ঃ
০ দিনঃ ঢাকা খাগড়াছড়ি। (আমরা সাধারণত রাতের বাসে যাই ও ঢাকাকে প্রাধান্য দেই তাই এভাবে লিখলাম)।
১ দিনঃ খাগড়াছড়ি আলুটিলা ও গুহা রিসাং ঝর্ণা অপু ঝর্ণা দেবতা পুকুর।
২ দিনঃ খাগড়াছড়ি দীঘিনালা সাজেক হাজাছড়া ঝর্ণা ঝুলন্ত ব্রীজ দীঘিনালা বন বিহার খাগড়াছড়ি ঢাকা (রাতের বাসে)।
প্রথম দিন ২৮০০-৩০০০ টাকায়  চাঁদের গাড়ী রিজার্ভ নিয়ে সব গুলো স্থান দেখতেপারবেন। দ্বিতীয় দিন ৫০০০-৬০০০ টাকার মত নিবে।


প্ল্যান২ঃ
০ দিনঃ ঢাকা খাগড়াছড়ি।
১ দিনঃ খাগড়াছড়ি  –  দীঘিনালা তৈদুছড়া ১ ও ২ ঝর্ণা দীঘিনালা।
২দিনঃ দীঘিনালাসাজেক হাজাছড়া ঝর্ণাঝুলন্ত ব্রীজদীঘিনালা বন বিহার দীঘিনালা।
৩ দিনঃ দীঘিনালা- নন্দরাম সিজুক ১ ও ২ ঝর্ণা খাগড়াছড়ি ঢাকা (রাতের বাসে)
প্রথম দিন চাঁদের গাড়ী রিজার্ভ না নিয়েও যেতে পারবেন। চাঁদের গাড়ী ১১০০-১২০০ টাকার মধ্যে রিজার্ভ নিয়ে খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালাআসতে পারবেন। অথবা বাসে দীঘিনালা জন প্রতি ৪৫ টাকা এবং মোটর সাইকেলে জন প্রতিভাড়া ১০০ টাকা। দীঘিনালা থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ৪০০০- ৪৫০০ টাকার মত নিবে।


প্ল্যান৩ঃ
০ দিনঃ ঢাকা খাগড়াছড়ি।
১ দিনঃ খাগড়াছড়ি আলুটিলা ও গুহা রিসাং ঝর্ণা অপু ঝর্ণা দেবতা পুকুর।
২ দিনঃ খাগড়াছড়ি  –  দীঘিনালা তৈদুছড়া ১ ও ২ ঝর্ণা দীঘিনালা।
৩ দিনঃ দীঘিনালা সাজেক হাজাছড়া ঝর্ণা ঝুলন্ত ব্রীজ দীঘিনালা বন বিহার খাগড়াছড়ি ঢাকা (রাতের বাসে)

কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে শ্যামলী , হানিফ ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। ভাড়া নিবে ৫২০ টাকা। শান্তি পরিবহনের বাস দীঘিনালা যায়। ভাড়া ৫৮০ টাকা। এছাড়া BRTC ও সেন্টমার্টিন্স পরিবহনের এসি বাস খাগড়াছড়ি যায়। 

যোগাযোগঃ

সেন্টমার্টিন্স পরিবহন - আরামবাগঃ ০১৭৬২৬৯১৩৪১ , ০১৭৬২৬৯১৩৪০। খাগড়াছড়িঃ ০১৭৬২৬৯১৩৫৮।
শ্যামলী পরিবহন- আরামবাগঃ ০২-৭১৯৪২৯১। কল্যাণপুরঃ৯০০৩৩৩১ , ৮০৩৪২৭৫। আসাদগেটঃ ৮১২৪৮৮১ , ৯১২৪৫৪। দামপাড়া(চট্টগ্রাম)ঃ ০১৭১১৩৭১৪০৫ , ০১৭১১৩৭৭২৪৯। 
শান্তি পরিবহন-আরামবাগ(ঢাকা) ০১১৯০৯৯৪০০৭। অক্সিজেন(চট্টগ্রাম) ০১৮১৭৭১৫৫৫২। চট্টগ্রাম থেকেও খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন।
BRTC এসিবাস  কদমতলী(চট্টগ্রাম): ০১৬৮২৩৮৫১২৫। খাগড়াছড়িঃ ০১৫৫৭৪০২৫০৭।

কোথায় থাকবেনঃ
খাগড়াছড়িতে পর্যটন মোটেল সহ বিভিন্ন মানের থাকার হোটেল আছে। দীঘিনালায় কয়েকটি হোটেল থাকলেও দীঘিনালা গেস্ট হাউজের মান কিছুটা ভালো।

খাগড়াছড়িঃ

পর্যটন মোটেলঃ এটি শহরে ঢুকতেই চেঙ্গী নদী পার হলেই পরবে। মোটেলের সব কক্ষই ২ বিছানার। ভাড়াঃ এসি ২১০০ টাকা, নন এসি ১৩০০ টাকা। মোটেলের অভ্যন্তরে মাটিতে বাংলাদেশের মানচিত্র বানানো আছে। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫।

হোটেল ইকোছড়ি ইনঃ খাগড়াপুর ক্যান্টর্মেন্ট এর পাশে পাহাড়ী পরিবেশে অবস্থিত। এটি রিসোর্ট টাইপের হোটেল। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬২৫ , ৩৭৪৩২২৫।
হোটেল শৈল সুবর্নঃ ০৩৭১-৬১৪৩৬ , ০১১৯০৭৭৬৮১২।
হোটেল জেরিনঃ ০৩৭১-৬১০৭১।
হোটেল লবিয়তঃ ০৩৭১-৬১২২০ , ০১৫৫৬৫৭৫৭৪৬ ,০১১৯৯২৪৪৭৩০।
হোটেল শিল্পীঃ ০৩৭১-৬১৭৯৫।

দীঘিনালাঃ

দীঘিনালা গেস্ট হাউজঃ এটি দীঘিনালা শহরের বাস স্ট্যান্ডের উল্টো পাশে অবস্থিত এটি দীঘিনালার আবাসিক হোটেল গুলোর মধ্যে একটু মানসম্মত। এখানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে রুম নিয়ে থাকা যাবে। নূর মোহাম্মদ(ম্যানেজার) ০১৮২৭৪৬৮৩৭৭
  
শাহজাহান হোটেলঃ হোটেলটি  দীঘিনালা বাজারেই। ০১৮২৫৯৮০৮৬৭  (ম্যানেজার) ০১৭৩২৫৭৩৬১৫ (মালিক)


কি দিয়ে ঘুরবেনঃ
খাগড়াছড়ি পাহাড়ী এলাকা তাই এই এলাকা পাবলিক বাস সার্ভিস কম। প্রায় সব রুটে পাবলিক বাস চললেও খুব কম। যতটুকু জানি সাজেক রোডে সপ্তাহে একদিন বাজারের দিন বাস যায় তাও একটি। তাই এর আশা করলে ভাল করে কিছু দেখা হবে না। ভাল ভাবে সব কিছু দেখতে হলে নিজস্ব গাড়ী বা রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীই ভরসা। চাঁদের গাড়ীর ভাড়া একটু বেশী হলেও যদি বড় গ্রুপ যান তাহলে খরচ  অনেকটা কমে আসবে। চাঁদের গাড়ী দুই সাইজের হয়। ছোটটিতে ১৪ জনের মতো বসতে পারবেন। আর ছাদে বসলে তো অনেক। যদি পূর্বের অভিজ্ঞতা না থাকে তবে ছাদে উঠলে লোহার এঙ্গেল ধরে একটু সাবধানে বসবেন। পার্বত্য আঞ্চলের মধ্যে খাগড়াছড়িতে পর্যটক তুলনা মূলক কম যায় তাই অনেক গাড়ি পাবেন। শহরের শাপলা চত্তরের পাশে ও দীঘিনালা বাস ষ্ট্যান্ডে গাড়ী পাবেন। একটু দেখে শুনে দর দাম করে ঠিক করে নিবেন।

কোথায় খাবেনঃ
শহরেকিছু ভাল মানের খাবার হোটেল থাকলেও দীঘিনালাতে তেমন মানের পাবেন না। তাই সৌন্দর্য্য দর্শনকে প্রাধান্য দিয়ে এই বিষয়টা একটু ছাড় দিতে হবে। সাজেক সহ ঝর্ণা দেখার দিন অবশ্যই শুকনো খাবার সাথে রাখবেন। আর খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই পানখাই পাড়ায় অবস্থিত সিস্টেম রেস্তোরায় অন্তত এক বেলা হলেও খেতে ভুলবেন না। এখানে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারবেন। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬৩৪ , ০১৫৫৬৭৭৩৪৯৩, ০১৭৩২৯০৬৩২২।



দীঘিনালারচাঁদের গাড়ির ড্রাইভার রাজ - ০১৮২০৭৪১৬৬২, ০১৮৪৯৮৭৮৬৪৯। শিবু-০১৮২০৭৪৬৭৪৪। সাজেক যেতে গাইডের তেমন দরকার নেই। তবুও প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন। আজম(গাইড, দীঘিনালা)- ০১৫৫৭৩৪৬৪৪২ আর MD Mubarok Khan Mohin ( 01828833400) ড্রাইভার ও গাইডকে আমার রেফারেন্স দিয়ে কথা বললে সাজেক সহ খাগড়াছড়ির সব জায়গায় ওদের নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে আসতে পারবেন বলে আশা করছি। খাগড়াছড়ি থেকে আপনি বাস বা মাইক্রোভাড়া নিয়ে বা নিজস্ব গাড়ীতে ভিতরের মনোরম পাহাড়ী পথে রাঙ্গামাটি যেতে পারবেন। খাগড়াছড়ি থেকে বাসে মহালছড়ি গিয়ে মহালছড়ি জালুয়া পাড়া ঘাট থেকে ট্রলারে নানিয়ার চর হয়ে রাঙ্গামাটি যেতে পারবেন। এছাড়া খাগড়াছড়ি থেকে বাস বা জিপে ( লোকাল নাম চাঁন্দেরগাড়ী ) লংগদু গিয়ে ট্রলারে করে রাঙ্গামাটি যেতে পারবেন।

আপনার সুন্দরনিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব ভ্রমনেই খুঁজে পাব আমার লেখার স্বার্থকতা। আপনার আনন্দ যাতে অন্যের বিষাদের কারণ না হয় সে দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। আপনার ও আপনার সঙ্গীদের দ্বারা প্রকৃতিরও যেন কোন ক্ষতি না হয় সেটাও খেয়াল রাখবেন। আসুন আমরা সাঁজাই আমাদের পৃথিবী সবুজের সমারহে। রেখে যাই সবুজ, সুন্দর ও দূষন মুক্ত পৃথিবী পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। সবাই ভাল ও নিরাপদে থাকবেন।


Thanks to Travel Of Bangladesh (TOB), Living In Forest, Sumit Bikram Rana.






No comments:

Post a Comment