বাংলাদেশের
এ পর্যন্ত অভিযান হয়েছে এমন
পাহাড়গুলোর মাঝে সবচেয়ে বিপজ্জনক
ও ঝুকিপূর্ণ চুড়া যোগী হাফং। মায়ানমার
সীমান্তে অবস্হিত মদক রেঞ্জের আরো
উচু উচু চুড়া আছে
। দেশের সবচেয়ে
উচু চুড়া মদক তং
বা সাকাহাফং ও এই এলাকাতেই
অবস্হিত । আর
সবচেয়ে কঠিন ও কষ্ট
সাধ্য জ- ত্লং ( ২য়
সর্বোচ্চ) এর খুব কাছেই
অবস্হিত । কিন্তু
এই যোগী হা ফং
বা যোগী পাহাড়টাই আরোহণের
দিক থেকে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ
বা বিপজ্জনক । ( উপরে
ছবিতে যোগী/ কনদুক দেখা
যাচ্ছে লোহ ঝিরি থেকে
)
যোগী পাহাড়ে ২০১৪-১৫
তে বেশ কিছু অভিযান
হয়েছে । চুড়া
হিসেবে এর বিশেষ সুনাম
থাকায় ট্রেকারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়
এই যোগী । বাংলাদেশের
তরুণ ও সম্ভবনাময়ী পর্বতারোহী
সালেহীন আরশাদী বিষয়টি প্রায়
ছয়টির মত চুড়া লোকেট
করেছেন । অসুবিধা
হচ্ছে যোগীতে অনেকগুলো সাব
সামিট রয়েছে , যেগুলোতে গিয়ে অনেকেই বুঝতে
পারেন না মুল সামিটে
গিয়েছেন কিনা । আর
গাইড বাবাজীরাও অনেককে গূগল - ভূগল
বুঝিয়ে সামিটে না পৌছিয়েই
সামিট দাবী করে বসে।
১। মেইন
সামিট থেকে কংদুক বা
যোগীর ২য় ও ৩য়
সামিট দেখা যাবে, অপেক্ষাকৃত
নীচু ও স্পষ্ট ।
মেইন সামিট থেকে পাওয়া
ভিউ।
মেইন সামিট থেকে চিন্হিত
সাব সামিটগুলো দেখা যায় ।
২। মেইন
সামিটের ৫/৬ হাত
দূরে ৪/৫ হাত
নীচু একটা জায়গা দেখা
যাব। কাছাকাছি
এরকম একটা জায়গা যোগীর
অন্য সামিটগুলোতে নেই । মহান
অভিযাত্রী মুগ্ধ এখানেই দাড়িয়েছিল
আর মাইনুল তার ছবি
উঠিয়েছিল।
বাংলাট্রেক
থেকে পাওয়া মুগ্ধর ছবি
|
৩। জ ত্লং আয়ান ক্লা্যাং এর ওয়েষ্ট ফেস অর্ধেকটাই যোগী ম্যাসিফ দিয়ে ঢাকা পরবে । জ ত্লং এর পশ্চিমের পুরা ঢাল দেখা যাবে না । ২৮০০-২৯০০ ফুটে পুরা ঢালটা সামনে থাকে । ৩১০০ ফুট সামিটে প্রায় পুরাটাই দেখা যায়, কিছুটা ঢাকা থাকে, মেইন সামিটে এমন নয় ।
ছবিটি ২৯০০ -৩০০০ ফুট উচু থেকে তোলা । আয়্যান এবং জ ত্লং এর পশ্চিম পাশ পুরাটাই দেখা যাচ্ছে এখানে।
উপরেরে
ছবিতে দেখা যাচ্ছে জ-ত্লং এবংআয়্যান ক্ল্যাং
অনেকটাই ঢাকা পরে গেছে
যোগী ম্যাসিফের আড়ালে।
৪। ৩০০
ডিগ্রী একটা খোলা ভিউ
পাওয়া যাবে । প্রথম
অভিযাত্রী দল ৩৬০ ডিগ্রী
ভিউ পাওয়ার কথা জানায়
, এখন একটা সাইডে প্রায়
৬০ ডিগ্রীর মত ঢেকে গেছে
বাশ আর গাছে।
এখান থেকে জ-ত্লং
এর ছবি তুললে কোন
বাশ/গাছ ফ্রেমে আসবে
না । ৩১০০
ফুটের ২য় /৩য় সামিট
থেকে ছবি তুললে বাশ/গাছ ফ্রেমে এসে
পরবে ।
মেইন সামিটের আগে একটা সাব
সামিট থেকে পাওয়া ভিউ
। বেশ কিছু
বাশ দেখা যাচ্ছে ।
মেই সামিট থেকে পাওয়া
ভিউ । ছবির
ফ্রেমে জ্ত্লং একদম খোলামেলা
। কোন ডাল
পালা বাশ ঝাড় এসব
আসেনি ছবির ফ্রেমে ।
৫। সামিট
মাত্র দুই হাত একটা
জায়গা ( লম্বা ও চওড়ায়
) পাশাপাশি দুই জন দাড়ালে
গায়ে গায়ে লাগা লাগি
হয়ে যাবে ! অন্য সামিট
গুলো এরকম না !
৬। যোগী
ম্যাসিফের ইষ্ট ফেস বেশ
খানিকটা দেখা যাবে ! আর
কোন সাব-সামিটে এটা
সম্ভব নয় ।
৭। আয়ান
ক্ল্যাং এর ও ইষ্ট
ফেসের ঢালটা দেখা যাবে
। ২৮০০ -৩০০০
ফুট পর্যন্ত আয়ানের শুধু নর্থ
রিজটা দেখা যায় ।
৩১০০ ফুটে গিয়ে নর্থ
রিজ আর ইস্ট ফেস
লাগালাগি ভাবে দেখা যায়
। কিন্তু ৩২০০
ফুটের বেশী মেইন সামিটে
গেলে নর্থের রিজ লাইনটা
একদম বরাবর এসে যায়
।
৮। আয়ান
ক্লাং ও কনদুক এর
কানেকটিং রিজটার ইষ্ট ফেস
দেখা যাবে ।
যোগী আরোহণের সময় ২৮০০-২৯০০ ফুট উচ্চতায় জ-ত্লং আর আয়্যান ক্ল্যাং দেখা যায় এরকম । দূরে ডানে চিম্বুক রেঞ্জের ক্রিসতং । সকাল বেলা পুরা সাংগু - রেমাক্রি অববাহিকা মেঘে ঢাকা ! মেঘের মাঝে উচু পাহাড়ের চুড়াগুলো মাথা বের করে আছে দ্বীপের মত।
আয়্যান ক্ল্যাং বা হলুদ পাহাড় আর বাংলাদেশের ২য় সর্বোচ্চ জ-ত্লং আপনার ডান পাশে দেখা যাবে । আয়্যানের দক্ষিণ রিজ আর জ এর উত্তর রিজ যেখানে মিলে সেখান থেকে আয়্যানেরে উত্থান দেখা যাবে পিরামিডের মত । একই স্হান হতে 'জ-ত্লং' এর উত্থান দ্বিগুনেরও বেশী । আয়ানের পিরামিডের উচ্চতা ৪০% এর মত হবে জ -ত্লং এর তুলনায় ( একই স্হান থেকে জ-ত্লং এর পিরামিড মাপা হলে)
যোগী আরোহণের সময় ২৯০০-৩০০০ ফুট উচ্চতায় জ-ত্লং আর আয়্যান ক্ল্যাং দেখা যায় এরকম । বেশ অনেকটা জুম করে তোলা হয়েছে ছবিটা , পোষ্টের প্রথম ছবিটা জুম করা হয়নি ) লক্ষ করবেন এই ভিউতে 'আয়ান ক্ল্যাং'এর পিরামিডের উচ্চতা ২৫-৩০% এর মত হবে 'জ -ত্লং' এর তুলনায় । ( একই স্হান থেকে জ-ত্লং এর পিরামিড মাপা হলে)
এবার দেখুন যোগীর ২য় বা তৃতীয় সামিট থেকে কেমন দেখা যাবে :
মুল সামিটের দক্ষিণে৩১২০ - ৩১৬০ ফুটের মত উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি সামিট আছে উচ্চতার হিসেবে এরা যোগী ম্যাসিফের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় । এখান থেকে আয়ান ক্ল্যাং এর পিরামিড কে আরো ছোট দেখায় জ-ত্লং এর তুলনায় । উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে 'জ-ত্লং' এর ভিউ আশে পাশের সবকিছুকে ডমিনেট করছে, আর আয়ান ছোট হয়ে যাচ্ছে !
এবার দেখুন মূল সামিট থেকে কেমন ভিউ পাওয়া যাবে :
সামিট থেকে দেখলে আয়ান -কে মনে হবে একদম মিশে গেছে । অল্প যতটুকু চোখে পরবে সেটা জ-ত্লং এর তুলনায় ১০% হতে পারে। মূল কথা দক্ষিন-পশ্চিম দিক থেকে আরোহণের সময় যত উচুতে উঠবেন আয়ান ছোট হতে থাকবে আর সে তুলনায় জ-ত্লং বড় হতে থাকবে। আসলে নিয়মটা এরকম-ই , যত উপরে উঠবেন বড় বড় পাহাড়গুলো আরো বিস্তৃত ও প্রশস্হ দেখায় । আর ছোট ছোটা পাহাড় ও অন্যান্য অবজেক্টগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে , কমপক্ষে ছোট থেকে ছোট হয়ে যায় !
THANKS TO রাতুলবিডি৪
No comments:
Post a Comment