১। সাকাহাফং
:
বই
পত্র আর ম্যাপে এর
নাম মদক তং ।
ট্রেকাররা ডাকে সাকাহাফং নামে
। বাংলাদেশের দক্ষিণ
পূর্ব সীমানায় মায়ানমার সাথে দেয়ালের মত
দাড়িয়ে আছে মদক রেঞ্জ
বা পাহাড়ের সারি । এই
পাহাড় সারির মাঝেই আছে
দেশের সবচেয় উচু উচু
চুড়াগুলো। সাকাহাফং
নামটা ত্রিপুরা ভাষায় যার অর্থ
পূবের পাহাড় । প্রথম
দিকের অভিযাত্রীরা সব ত্রিপুরা পাড়া
শালুকিয়া অবস্হান করে চুড়ায় যেতো
। প্রথামদিককার একটি
অভিযাত্রী দল এসে এই
পাহাড়ের নাম খোজ করলে
জানতে পারে পাহাড়ীদের কাছে
(ত্রিপুরা) এর কোন নাম
নেই ! পাহাড়টা পূবদিকে তাই অভিযাত্রীরা গ্রামবাসীদেরর
সাথে আলোচনা করে ঠিক
করে এখন থেকে একে
পুবের পাহাড় নামেই ডাকা
হবে । সেই
থেকে এর নাম ত্রিপুরা
ভাষায় সাকাহাফং নামেই প্রচার ও
প্রসার লাভ করে ।
২। জ
ত্লং :
অনেকদিন
পর্যন্ত মদক মুয়ালকেই কিছু
কিছু লোকজন দেশের সবচেয়ে
উচু চুড়া মনে করত
। তবে নাসার
স্যাটেলাইট ডেটা থেকে দেখা
যায় এটা দেশের ২য়
বা ৩য় চুড়া ।
কোন কোন স্যাটেলাইট ডেটা
অনুসারে রেংত্লাং রেঞ্জের দুমলং ২য় আর
জ-ত্লং তৃতীয় ।
তবে অভিযাত্রী দলগুলো প্রায় সবাই
জ ত্লং কেই ২য়
পেয়েছে । তবে
জত্লং এর প্রধান বৈশিষ্ট্য
এর ১ম, ২য় বা
৩য় অবস্হান না । এর
কঠিন আর দুরূহ আরোহন
পথটাই একে অন্যান্য চুড়া
থেকে সতন্ত্র করেছে। সব
অভিযাত্রীরাই এ কথা বিনা
দিধায় বলবে আমাদের দেশে
জ-ত্লং আরোহন -ই
সবচেয়ে কঠিন ।
৩। দুম
লং :
বাংলাদেশের
সর্বোচ্চ চুড়া মদক তং
বা সাকাহাফং অভিযানের পর দেশের এডভেঞ্চার
প্রেমীদের চোখ পরে দুমলং
এর উপর । রেংত্লাং
রেঞ্জের সর্বোচ্চ চুড়াটি তখনও দুমলং
নামে পরিচিত হয়নি ।
গুগুল আর্থ - এ এটাকেই
দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চুড়া হিসেবে দেখাত
। রেংত্লাং এর
সর্বোচ্চ চুড়া হিসেবে একে
রেংত্লাং নামেই ডাকা হতো
। রেংত্লাং এর এই চুড়াটা
স্হানীয়রা দুমলং নামেই ডাকে। দুমলং
মুলত একটি ঝিরি বা
ছোট পাহাড়ি নদী , যেটা
পাহাড়ের গা বেয়ে কয়েক
কিলোমিটার উত্তরে রাইখান নদীটে
মিশেছে । এই
ধারাটির উৎস হিসেবে চুড়াটাকেও
দুমলং বলা হয় । দুমলং এর তিনটি
চুড়া , উত্তরের চুড়া, পশ্চিমের চুড়া
আর আসল চুড়া।
৪
। যোগী হাফং
:
বাংলাদেশের এ পর্যন্ত অভিযান হয়েছে এমন পাহাড়গুলোর মাঝে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও ঝুকিপূর্ণ চুড়া যোগী হাফং। মায়ানমারসীমান্তে অবস্হিত মদক রেঞ্জেরআরো উচু উচু চুড়া আছে । দেশের সবচেয়ে উচু চুড়া মদক তং বা সাকাহাফং ও এই এলাকাতেই অবস্হিত । আর সবচেয়ে কঠিন ও কষ্ট সাধ্য জ ত্লং (২য়সর্বোচ্চ) এর খুব কাছেই অবস্হিত । কিন্তু এই যোগী হা ফং বা যোগী পাহাড়টাই আরোহণের দিক থেকে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ বা বিপজ্জনক ।
৫। কেওক্রাডং
:
কেওক্রাডং
বা তাজিংডং কোনটাই যে দেশের
শীর্ষ চুড়া না , সেটা
ইউএস টপোগ্রাফিক ম্যাপ আর রাশান
টপো ম্যাপে দেখা যায়
বেশ কয়েক বছর আগেই। তবে
এই ম্যাপগুলো উন্মুক্ত হলেও সহজলভ্য ছিল
না। তথ্য
প্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে ইন্টারনেটের অভাবিত
বিস্তারে সবাই বেশী করে
একসেস পায় - এজাতীয় তথ্য
আর মানচিত্রে।
কেওক্রাডং
বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় অবস্থিত। অর্থাৎ
বান্দরবানেরও দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে
অবস্থিত। কেওক্রাডং শব্দটি মারমা ভাষা থেকে এসেছে। মারমা
ভাষায় কেও মানে 'পাথর', ক্রা মানে 'পাহাড়' আর
এবং ডং মানে 'সবচেয়ে উঁচু'। অর্থাৎ
কেওক্রাডং মানে সবচেয়ে উঁচু
পাথরের পাহাড়।
৬।
লুকুডং বা থিনদলতে:
থিনদলতে পাড়া থেকে চুড়ায়
যাবার সময় এরকম একটা
ভিউ পাওয়া যায় থিনদলতে
পাহাড় বা লুকু ডং
এর । থিনদলতে
- একটা গাছের নাম ।
ছোট ছোট পাতা ।
প্রথম যখন পাড়া প্রতিষ্ঠিত
হয় এখানে, বর্তমান কারবারীর
বাবার আমলে, ছোট ছোটা
পাতার এই গাছটি প্রচুর
পরিমানে ছিল এখানে।
আর থিনদলতে গাছের নাম অনুসারে
এই পাড়ার নামও হয়ে
যায় থিন্দলতে পাড়া । আশে
পাশের পাড়ার লোকেরা একে
ডাকে 'লুকু' নামে, লুকুডং
। তবে থিনদলতে
পাড়ার লোকেরা একে থিনদলতে
ত্ল্যাং নামেও ডাকে আবার
লুকুডং ও বলে । আর থিনদলতে পাড়া
থেকে চুড়া মাত্র ঘন্টা
খানেকের পথ ।
No comments:
Post a Comment